সুতার কাউন্ট কি কাউন্ট বলতে সুতার একক ভরের দৈর্ঘ্য বা একক দৈর্ঘ্যের ভরকে বোঝায়। সুতার কাউন্ট এর দ্বারা সুতা কতটুকু মোটা কিংবা চিকন তা পরীক্ষা করা হয়। ফেব্রিক বা পোশাকের উৎপাদনের ক্ষেত্রে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের ঋতু অনুযায়ী পোশাক উৎপাদিত হয়। তাই পোশাক উৎপাদনের ক্ষেত্রে সুতার কাউন্ট এর মাধ্যমে নির্ণয় করতে হয় সুতা কতটুকু মোটা বা চিকন।
সুতার কাউন্ট কি
সুতার কাউন্ট কি এবং কত প্রকার ও কি কি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। তাই তাদের উদ্দেশ্যে আজকে আমার এই আর্টিকেলটি লেখা। যারা এই সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তারা অবশ্যই আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং সুতার কারন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নিতে পারবেন। চলুন শুরু করা যাক।
সুতার কাউন্ট কি
সুতার কাউন্ট বলতে সুতরাং একক ভরের দৈর্ঘ্য বা একক দৈর্ঘ্যের ভরকে বোঝায়। কাউন্ট একটি ইংরেজি শব্দ যার অর্থ গণনা করা। এটিকে Ne বা S দ্বারা প্রকাশ করা হয়। সুতার একক ভরের দৈর্ঘ্য বা একক দৈর্ঘ্যের ভর হচ্ছে সুতার কাউন্ট। অর্থাৎ সুতার কাউন্টার দ্বারা সুতা কতটুকু মোটা বা চিকন সেটা নির্ণয় করা হয়।
কাউন্ট কত প্রকার ও কি কি
সুতার কাউন্ট মূলত ২ প্রকার। যথা;
১) Direct (প্রত্যক্ষ) কাউন্ট।
২) Indirect (পরোক্ষ) কাউন্ট।
ডিরেক্ট কাউন্ট
সুতার দৈর্ঘ্যের ভরকে ডিরেক্ট কাউন্ট বলে। অর্থাৎ সুতার কাউন্ট যত বেশি হবে সুতা তত মোটা হবে তবে কাউন্ট যত কম হবে সুতা তত সূক্ষ্ম হবে। যেমন: টেক্স কাউন্ট, ডেনিয়ার কাউন্ট ইত্যাদি।
- ডিরেক্ট কাউন্ট (N)=(I×W)/(L×w)
- N=সুতার কাউন্ট।
- L=নমুনা সুতার লেন্থ।
- W=স্যাম্পল সুতার ওয়েট।
- w=ওজনের একক।
- I=দৈর্ঘ্যের একক।
ডিরেক্ট কাউন্টের কিছু পদ্ধতি
ডেট কাউন্টের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো;
টেক্স কাউন্ট
১০০০ মিটার সুতার ভর যত গ্রাম উক্ত সুতার টেক্স কাউন্ট কত। যেমন: ৫০ টেক্সট বলতে বোঝায় যে ১০০ মিটার সুতার ভর ৫০ গ্রাম।একে Nt দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ডেনিয়ার কাউন্ট
নয় হাজার মিটার সুতার ভর যতগ্রাম মুক্ত সুতার ডেনিয়ার কাউন্ট তত। একে Nd দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন:৬০ ডেনিয়ার বলতে বোঝায় যে ৯০০০ মিটার সুতার ভর ৬০ গ্রাম।
ইন্ডিরেক্ট পদ্ধতি
সুতার একক ভরের দৈর্ঘ্যকে ইনডিরেক্ট পদ্ধতি বলে। ইন্ডিরেক্ট পদ্ধতিতে সুতার কাউন্ট যত বেশি হবে সুতা তত চিকন হবে। আর কাউন্ট যত কম হবে সুতা তত মোটা হবে। যেমন: ইংলিশ কাউন্ট, ম্যাট্রিক কাউন্ট, ওরস্টেট কাউন্ট।
- ইন্ডিরেক্ট কাউন্ট (N)=(L×w)/(I×W)
- N=সুতার কাউন্ট।
- L=স্যাম্পল সুতার লেন্থ।
- W=নমুনা সুতার ওজন।
- I=দৈর্ঘ্যের একক।
- w=ওজনের একক।
- ইন্ডিরেক্ট কাউন্ট এর বিভিন্ন পদ্ধতি
- ইংলিশ কাউন্ট (Ne)
আরো পরুন : সেলাই মেশিনের দাম কেমন; কোন সেলাই মেশিনের দাম কেমন ২০২৩-২০২৪
৮৪০ বাজ সুতার যতগুলো হ্যাংঙ্ক এর ভর পাউন্ড হয় উক্ত সুতার ইংলিশ কাউন্ড তত। এটিকে Ne দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন:Ne বলতে বোঝায় যে ৮৪০ গজ সুতার ২৪ হ্যাঙ্ক এর ভর ১ পাউন্ড হয়।
ম্যাট্রিক কাউন্ট (Nm)
১০০০ মিটার সুতার যত গুলো হ্যাঙ্ক এর ভর ১ কেজি হয় উক্ত সুতার ম্যাট্রিক্স কাউন্ট তত হবে। একে দ্বারা Nm প্রকাশ করা হয়। যেমন: ২৪ Nm বলতে বোঝায় যে ১০০০ মিটার সুতার ২৪ হ্যাঙ্কের ভর ১ কেজি হয়।
ওরস্টেট কাউন্ট (Nwor)
৫৬০ হ্যাংঙ্ক এর ভর ১ পাউন্ড হয়। উক্ত সুতার ওযরেস্টেড কাউন্ট তত। একে Nwor দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

কটনের জন্য
- ১৬ আউল =১ পাউন্ড
- ৪৫৩.৬ গ্রাম =১ পাউন্ড
- ৮৪০ গজ = ১ হ্যাঙ্ক
- ৩৬ ইঞ্চি =১ গজ
- ১ লী = ১২০ গজ
- ৭০০০ গ্রেইন = ১ পাউন্ড
- ১ কেজি = ২.২০৪ পাউন্ড
- ১ মিটার = ১.০৯ গ্রাম
- ১ মিটার = ১০০০ মি.মি
- ১ গজ = ২.৫৪ সে.মি
- ১ গজ = ২৫.৪ মিটার
- ১ মিটার = ১০০ সে.মি
- কটন কাউন্ট *টেক্স =৫০৯.৫
- কটন কাউন্ট *ডেনিয়ার = ৫৩১৫
- ডেনিয়ার= ৯* টেক্স
টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাউন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।কেউ যদি টেক্সটাইল বিষয় নিয়ে আগ্রহী হয় তাহলে অবশ্যই কাউন্ট সম্পর্কে তাকে জানতে হবে। কাউন্ট সম্পর্কে না জানলে টেক্সটাইল বিষয়ে কেউ সম্পূর্ণ ধারণা নিতে পারবে না। পোশাক তৈরিতে কেমন সুতা ব্যবহার হবে তা নির্ধারণ করা হয় সুতার কাউন্টের মাধ্যমে। তাই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে সুতার কাউন্ট অত্যাবশ্যকীয় বিষয়।
প্রশ্ন: কাউন্ট এবং GSM এর মধ্যে সম্পর্ক কি?
উত্তর: পরোক্ষ পদ্ধতির ক্ষেত্রে কাউন্ট বেশি হলে সুতা সূক্ষ্ম হয় তাই কাপড়ের জিএসএম কম হয়।
আর প্রত্যক্ষ পদ্ধতির ক্ষেত্রে কাউন্ট বেশি হলে সুতা মোটা হয় তাই কাপড়ের জিএসএম বেশি হয়।
প্রশ্ন:ইনডাইরেক্ট কাউন্টের সূত্র কি?
উত্তর: (L×w)/(I×W)
প্রশ্ন: ডিরেক্ট একাউন্ট কোন কোন কাপড়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: ডিরেক্ট একাউন্ট নাইলন সিল্ক জুট এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন: ইন্ডিকেট কাউন্ট কোন কোন কাপড়ে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: কটন উলেন লিলেন ইত্যাদি আশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।