এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও আটকে রাখতে পারেনি হাবিবের মেধাকে। দুই হাত না থাকার পরও পা দিয়ে লিখেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
জন্মগত ভাবে প্রতিবন্ধী মো. হাবিবুর রহমান (১৯) রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হেমায়েত খালী গ্রামের কৃষক মো. আ. সামাদের একমাত্র ছেলে পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে হাবিব তৃতীয়।
এবিষয়ে জানার জন্য রোববার পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে গেলে অধ্যক্ষ ও আলিম পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওয়াবুল্লাহ ইব্রাহিম বলেন, জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী হাবিবুর রহমান আমার তত্ত্বাবধানে এই কেন্দ্রেই জেএসসি এবং দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে, ও চলমান আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে। শুনেছি সে অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান। সাহায্য সহযোগিতা পেলে হয়তো সে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অদম্য মেধাবী হাবিবুর রহমানের দুই হাত নেই। তিনি প্রথমে তার গ্রামের হেমায়েত খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। পরে ২০১৫ সালে পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ৪ পয়েন্ট ৬৩ নাম্বার নিয়ে জেএসসি পরীক্ষায় পাশ করে। এরপর ২০১৮ সালে দাখিল পরীক্ষায় ৪ পয়েন্ট ৬১ নাম্বার নিয়ে পাশ করে। এবার একই মাদ্রাসা থেকে পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (কেন্দ্রে) আলিম পরীক্ষায় অংশ নেন।
হাবিবুর রহমানের বড় দুলাভাই (ভগ্নিপতি) আনোয়ার হোসেন বলেন, হাবিব জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার মধ্যে অনেক প্রতিভা এবং আত্মবিশ্বাস রয়েছে। সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে চায়।
পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ , মো. হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, হাবিব আমার মাদ্রাসার অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র, সে প্রতিটা ক্লাসেই ভালো করে আজকে আলিম পরীক্ষা দিতে আসছে, সে আমাদের মাদ্রাসা এবং দেশের গর্ব। তাকে নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী, তবে তার পরিবার দরিদ্র। সমাজের বিত্তবান ও সরকারের পক্ষ থেকে তার পাশে এসে দাঁড়ালে হয়তো সে আরও ভালো কিছু করতে পারবে।।